এক মুসলিম,মোটামুটি রক্ষণশীল পরিবার,ধর্মীয় অনুশাসনে বড় হওয়ার পরেও নিজের ঈমান নিয়ে খুব বেশি সচেতন না থাকলে শয়তানের প্রতারণায় ধর্মের পথ থেকে বিচ্যুত হতে মোটেও সময় লাগেনা।বিশেষ করে নামাজ,রোযা পালন করেও হালাল-হারাম সম্পর্কে সূক্ষ্ম ধারণা না থাকলে খুব সহজেই যে কেও ভ্রান্তির পথে জড়িয়ে যায়।দেখা যায় যে,বছরের পর বছর নামাজ,রোজা কন্টিনিউ করেও শয়তানের ধোঁকায় পড়ে বা ইসলামের মৌলিক বিষয় গুলি না জানার কারণে একইসাথে পাপ কাজগুলি ও সমানতালে চালিয়ে যায়।
একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর পড়াশুনার তাগিদে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এক ফ্রি মিক্সিং পরিবেশে অনেকেই খাপ খাওয়াতে পারেনা।ফলে,তার আশেপাশের ফ্রেন্ড সার্কেল দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সহজেই মানুষ ভুল পথে পা বাড়াতে সময় নেয়না (সাথে ঈমানের সচেতনতার অভাব তো আছেই)।ঠিক ওইরকম এক মূহুর্তে কিছুটা ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা মানুষ টাও ভুলক্রমে ভুল পথে পা বাড়িয়ে ফেলে।।একপাশে হালাল আর আরেকপাশে হারাম নিয়ে নির্দ্বিধায় চলতে থাকে সে।ইসলাম নিয়ে গভীর জ্ঞান না থাকার কারণে তার কৃত ইবাদাত গুলো যে রবের কাছে ঠিকঠাকভাবে পৌঁছাচ্ছে না, তা সে বুঝে উঠতে পারেনা।দিনের পর দিন এভাবেই অবাধ্যতায় চলতে থাকে তার দিনগুলি।কিন্তু সে তো আর জানেনা হালাল আর হারাম কখনোই পাশাপাশি চলতে পারেনা।
তারপর একদিন!!সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ইসলামিক কিছু গ্রুপের খোঁজ পায় হুট করেই।ইসলাম নিয়ে জানার অনেক ক্ষেত্র মূহুর্তের মধ্যেই হাতের নাগালে পেয়ে যায়।সে তখন ইসলাম নিয়ে অনেক কিছু জানতে পারে যেটা হয়তো পরিবার থেকে বা ঐ রিলেটেড বই না পড়ার কারণে জানতে পারেনি।হেদায়েতের মালিকের অসীম করুণায় সে আবার রবের দিকে পূর্নদ্যোমে ফিরে আসার চেষ্টা করে।হালাল-হারাম নিয়ে পরিপক্ব ধারনা পাওয়ার পর সর্বপ্রথম হারাম থেকে ফিরে এসে রবের নিকট আশ্রয় চায়।এর জন্য অনেকের নিকট সে হয়ে যায় ঢংগী,অহংকারী, এই তোর কি হইছে রে…….. এই টাইপের আরও কত কি!!!!
হঠাৎ করে তার পরিবর্তনে অনেকেই জানতে চায় কোনো সংগঠনে যুক্ত হয়েছে কিনা বা হুটহাট তার এই পরিবর্তনের কারণ কি।আগে-পরে কিছু কিছু মানুষ হয়ত তাকে নিয়ে অতীতের মুখরোচক কথা বলে যেটা সে বুঝতে পারে।
সে শুনেও না শুনার ভান করে কিংবা কিছু কিছু কথার জবাব দিতে গিয়েও ব্যার্থ হয় এই ভেবে যে,
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবীজী (হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন – “প্রত্যেক আদম সন্তানই পাপ করে, পাপীদের মধ্যে তারাই সর্বোত্তম যারা তওবা করে।
— সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং- ২৪৯৯
সে হয়তো এখন ও পুরোপুরিভাবে ইসলামের সবকিছু মেনে চলতে পারেনি তবে তার প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।ইসলামের কিছু কিছু বিষয় সে এখন গভীরভাবে অনুধাবন করতে পারে যেটা আগে কখনো করেনি।আসলে রবের দিকে প্রত্যাবর্তনের কোনো বাঁধাধরা সময় নেই,বয়স নেই।যেকোনো বয়সে,যেকোনো সময়ে হুটহাট মানুষের মধ্যে পরিবর্তন আসতে পারে।
*****অনেকেই হয়তো ভুল পথে বহুদূর হেঁটে রবের পথে আসে,দেরি করে আসে।কিন্তু রবের নিকট ই তো আসে!!!
আমার রব তো দয়ালু,পরম করুণাময়। অনুতপ্ত হৃদয় নিয়ে তার কাছে ক্ষমা চাইলে তিনি নিশ্চয়ই আমাদের ক্ষমা করবেন।
ভুল পথ থেকে হেদায়েত প্রাপ্ত সকলকে আমার রব তার দ্বীনের উপর অটল রাখুক,শয়তানের ধোঁকাবাজি থেকে আমাদের বাঁচিয়ে রাখুক – আমীন
(নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক)
Facebook Comments