সংকলন
রুকইয়াহ কেস স্টাডি
কেইস স্টাডি তোফায়েল খান রুকইয়াহ লেখক

রুকইয়াহ কেস স্টাডি: ৩ (বিচ্ছেদের মিশনে জ্বীন) | তোফায়েল খান

রোগীঃ স্বামী-স্ত্রী। বিয়ের বয়স দেড় বছর।
.
সমস্যাঃ
– স্বামী – স্ত্রী একে অন্যের সাথে খারাপ ব্যবহার করে। কোন যৌক্তিক কারণ ছাড়া।
– অকারণ রেগে যায়। প্রচন্ড ঝগড়া। পরে বুঝতে পারে, এই ঝগড়ায় কোন কারণই ছিলো না।
– স্ত্রী যখন ঘরে একা থাকে তখন ঠিক থাকে। স্বামী ঘরে এলেই তার মেজাজ গরম হয়ে যায়।
– স্বামী বাইরে ভালোই। কিন্তু ঘরে এলে অস্থির লাগে। মনে হয় ঘর থেকে বের হয়ে যাই। স্ত্রীর কথা শুনলেই বিরক্ত লাগে।
– ঝগড়া করার সময় স্ত্রী ঘরের মধ্যে তৃতীয় আরেকজনের উপস্থিতি অনুভব করে। মাঝে মাঝে তার খুশি হওয়ার শব্দও পান।
.
রুকইয়াহ অত:পর …

রুকইয়াহ সিডিউল নেয়ার আগে এসেছিলো দেখা করতে। কিছু প্রশ্ন করে যে বিষয়গুলো বের করলাম।

যেমন: স্বামী কাছে এলেই স্ত্রীর হার্টবিট বেড়ে যায়, ব্লাড সার্কুলেশন বেড়ে যায়, মাথার তালু গরম হয়ে যায়।
তেমনি স্ত্রীর কাছে গেলে স্বামীর বুকে চাপ অনুভব করে, মাথা গরম হয়ে যায়। অস্থির লাগে। হাত পা নিশ-পিশ করে। মেজাজ বিগড়ে থাকে।
.
স্বামী-স্ত্রীকে পাশপাশি বসিয়ে তেলাওয়াত শুরু করার কিছুক্ষণের মধ্যে স্বামীর অস্থিরতা বেড়ে যায়। অন্যদিকে স্ত্রীর সামান্য মাথাব্যাথা।
তার কয়েকমিনিট পরই স্বামীর প্রচন্ড খিচুনী হতে থাকলো। বুঝাই যাচ্ছে জ্বীন চাচ্ছে না সামনে আসতে বা কথা বলতে।
রোগীর বুকের উপর চাপ দিয়ে ধরে…
হালকার উপ্রে ঝাপসা হুমকি দিলাম,
– তুই রোগীকে সামান্য কষ্টও দিবি না। নয়তো তোকে কঠিন শাস্তি দেয়া হবে। আমাদের কথা শুনবি তোকে মাফ করে দিবো। শান্ত হ। বডি রিলাক্স কর।
.
শান্ত হওয়ার পর, কিছু প্রশ্ন করলাম,
তার নাম ইসমাইল এইটুকু বাদে সে কোন তথ্য দিতে রাজি না।
আমাদের হাতেও খুব বেশি সময় ছিলো না। শাস্তির আয়াত পড়ে চেহারায় বার কয়েক ফু দিতেই বললো, আমাকে পাঠানো হয়েছে।
চট্টগ্রাম থেকে কাওসার নামের কবিরাজ পাঠিয়েছে।
আমাকে ছেড়ে দিন।
.
তোকে কি মিশন দিয়ে পাঠিয়েছে?
– স্বামী স্ত্রীকে যন্ত্রণা দেয়ার জন্য।
তথ্য আদায় করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। কথা বলতেই চায় না। এদিকে মাগরীবের নামাযের সময় হয়ে গেছে।
.
মাগরীবের নামাযের পর এক ছোটভাই কল দিলো। তার এইখানে যাওয়ার জন্য তাড়া দিচ্ছে।
ফোন রিসিভ করে বললাম,
এই তো ! একটা জ্বীন ধরা পড়সে। ওরে জবাই করতে যতক্ষণ লাগে। জবাই শেষ করেই আমি রওয়ানা হচ্ছি ইনশাআল্লাহ।
এটা বলার সময় আড়চোখে জ্বীনের চেহারার এক্সপ্রেশন দেখতেছিলাম।
.
এই ধমকিও কাজে লেগেছে।
সে কবিরাজের কাছে বন্দী। তাই এই মিশনে এসেছে। তার মূল মিশন দুজনের বিচ্ছেদ ঘটানো। এজন্য দুজন পাশাপাশি হলেই সে দুজনকেই উত্তেজিত করে। ঝগড়া থেকে হাতাহাতি পর্যন্ত চলে যায়।
.
তাকে তওবা করিয়ে দু’আ করানো হলো। আমরাও দু’আ করলাম। তেলাওয়াত করলাম।
কিছুক্ষণ পর ..
জ্বীন বললো, আমি এখন চলে যেতে পারবো। আমি মুক্ত।
বললাম,
দেশ ছেড়ে চলে যাবি। কোন দেশে যাবি? চুজ কর?
– আমি তো এই দেশের বাইরে কোনদিন যাইনি। আপনারাই দেশের নাম বলে দেন, আমি চলে যাই।
– আচ্ছা, যা। আফগানিস্থান চলে যা।
.
আলহামুদলিল্লাহ। এরপর থেকে দুজনের সম্পর্ক স্বাভাবিক। এবং শারিরীক সমস্যাগুলোও আর নাই।

রুকইয়াহ কেসস্টাডি সব একত্রে

Facebook Comments

Related posts

তাফসিরে দরসে কুরআন-২ | মাওলানা মানজুর মেঙ্গল দা.বা.

নির্মল জীবন ১ | ইমরান রাইহান

সংকলন টিম

ফাতিমা আল-ফিহরি | পৃথিবীর সর্বপ্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা

সংকলন টিম

Leave a Comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

error: Content is protected !!