সংকলন
রুকইয়াহ কেস স্টাডি ১
কেইস স্টাডি তোফায়েল খান রুকইয়াহ লেখক

রুকইয়াহ কেইস স্টাডি:১ [কালাচাঁন] | তোফায়েল খান

রোগী : মেয়ে। বয়স ১৯। ছাত্রী।

সমস্যাঃ
– নিয়মিত পেটব্যাথা।
– প্রতিদিন ঘুমের মধ্যে স্বপ্নে সাপ দেখা।
– বিশাল এবং ভয়ংকর এক সাপ প্রতিদিন তাকে তাড়া করে এবং
– প্রচন্ড ভয়ে ঘুম ভেঙ্গে যায়। আর ঘুম হয় না।
– নিয়মিত অসুস্থ থাকে।
– যেখানে যায়, ভয় ভয় লাগে। আশ-পাশে কে যেন আছে মনে হয়।
.
সমস্যার সময়কালঃ প্রায় ৬ বছর যাবত।
.
চিকিৎসাঃ ডাক্তারী ট্রিটমেন্টের পাশপাশি অনেক কবিরাজের শরণাপন্নও হয়েছেন। এর মধ্যে বিখ্যাত এক মহিলা কবিরাজও আছে।
[ওই মহিলার ভন্ডামী সম্পর্কে সামনে বলার ইচ্ছে রাখি। পর্যাপ্ত ইভিডেন্স হাতে এসে নিক।]
.
সমস্যার শুরুঃ জ্বীনের ভাষ্যমতে, বাড়ীর পেছন থেকে তাকে ধরেছে। জ্বীন কালাচান ঝেড়ে কাশেনি, তবে বুঝা গেছে সে খাবায়িস। মানে টয়লেটের জ্বীনদের মধ্য থেকে। ভিকটিম দোয়া পড়া ছাড়া টয়লেটে গিয়েছিলো। ওইখান থেকে তার সমস্যার শুরু।
জ্বীন ছাড়াও তার শরীরে জাদুর প্রভাব ছিলো। তবে আমরা জ্বীনের সাথে যাদুর সম্পর্ক পাইনি। সম্ভবত যাদু ছিলো বশ করার। পাড়া-প্রতিবেশী থেকে কোন ছেলে যেন তাকে পছন্দ করতো। এবং বেশ ঘোর-ঘোরও করেছে।
.
রুকইয়াহঃ
স্বাভাবিকভাবেই রুকইয়ার পানি পান করানো হলো। তারপর তেলাওয়াত শুরু করা হলো। তেলাওয়াতের শুরুতেই সে আতংকিত হতে থাকলো। সিহরের আয়াতগুলো পড়ার শুরু করতেই বমি শুরু করলো। প্রচন্ড রকম বমি করে ঘর ভরিয়ে ফেললো। অবস্থা দেখে কিছু আত্মীয়-স্বজন ডাক্তারের কাছে নিতে চাইলো।
আত্মীয়-স্বজনকে আশ্বস্থ করা হলো, তাকে করা যাদুর প্রভাবেই এইরকম হচ্ছে।
.
এর মধ্যে জ্বীনও হাজির। অল্প তেলাওয়াতেই জ্বীনকে বেশ আঘাতপ্রাপ্ত মনে হলো এবং ভীত মনে হলো। নাম জিজ্ঞেস করলে বললো, কালাচাঁন।
.
আতংকিত হয়ে কালাচান টেবিল-চেয়ারের নীচে লুকাতে চায়। কালাচান শুরুতেই চলে যেতে রাজি। তারপরও তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হলো। সে রোগীকে যাদু করেছে কি না? – এই প্রশ্নে সে বেশ দৃঢ়ভাবে বললো, আমি শুধু রোগীর শরীরেই আসি। আর ভয় দেখাই। তাকে আমি কোন ক্ষতি করিনি। আর এই যাদুর সাথে আমার কোন সম্পর্ক নাই।
.
এই রোগীকে অনেক কবিরাজ দেখানো হয়েছে। কবিরাজরা জ্বীনের কথা বলেছেও। কিন্তু এই দুর্বল ক্যাটগির এবং সিম্পল এই জ্বীনটাকেও তারা তাড়াতে পারেনি। শুধু শুধু রোগীর গলায় কয়েকটা বড় বড় তাবিজ ঝুলিয়ে দিসে। আর সময় সময় টাকা আদায় করে নিয়েছে।
.
তেলাওয়াত শুরুর পূর্বেই, রুকইয়াহর দু’আগুলো পড়ার সময়ই রোগীর রিএ্যাকশন শুরু হয়ে গেছে। আহ! ভন্ড কবিরাজগুলো যদি আল্লাহর কালাম থেকে কয়েকটা আয়াতও মুখস্থ করে নিতো। আর তা পাঠ করে রোগীর উপর ফূ দিতো। তাহলেও কিছুটা ফায়দা হতো।
.
রোগী আলহামদুলিল্লাহ সুস্থ। সব মিলে রুকইয়াহ করতে ঘন্টাখানেকের চেয়ে একটু বেশি সময় লেগেছে।

Facebook Comments

Related posts

গেরিলা মহাযোদ্ধা | আহমাদ উসমান

চলন্ত কুতুবখানা : আল্লামা কাশ্মীরী (রহ.) | মুশতাক আহমাদ

সংকলন টিম

সুবাস জড়ানো অলিন্দে | আহমাদ সাব্বির

সংকলন টিম

Leave a Comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

error: Content is protected !!