খোরাসান৷ ইসলামি ইতিহাসে স্মৃতিবিজড়িত এক নাম। যে খোরাসান আজ মিশে গেছে ইরাক, ইরান, আফগানিস্তান, উজবেকিস্তান, তুর্কমেনিস্তানের সাথে৷ এককালে যেখানে ছিল নিশাপুর, মার্ভ, তুস, বালখ এবং হেরাতের মতো ঐতিহাসিক শহরগুলো৷ এই অঞ্চলজুড়ে শতাব্দীর পর শতাব্দী হয়েছে ইসলাম এবং ইসলামি জ্ঞানের সাধনা। জন্ম নিয়েছেন অজস্র মনীষী, বিদ্বান এবং আল্লাহর অলি৷ সালাফের বরকতময় পদচারণায় সিক্ত হয়েছে এই পুন্যভূমি।
এমনই এক মনীষী ছিলেন আবুল হাসান বুশানজি রাহিমাহুল্লাহু। বুশানজ: বর্তমান আফগানিস্তানের হেরাত প্রদেশের একটি শহর৷ হিজরি চতুর্থ শতাব্দীতে এখানেই বেড়ে উঠেন আবুল হাসান বুশানজি রাহিমাহুল্লাহু। একসময় হয়ে উঠেন নিজ সময়ের অন্যতম একজন সুফী এবং আলিম৷
ইলম অর্জনের জন্য চষে বেড়িয়েছেন শাম থেকে ইরাকে৷ অবশেষে থিতু হয়েছিলেন এককালের জ্ঞানের শহর নিশাপুরে। হয়েছে অনেক আলিমের সঙ্গে সাক্ষাৎ। আকিদা এবং তাওহিদ সম্পর্কিত জ্ঞানে তিনি ছিলেন নিজ সময়ে অনন্য আসনের অধিকারী।
তাবাকাতুস সুফিয়্যাহ গ্রন্থের লেখক আবু আবদুর রহমান আস সুলামি বলেন: তাওহিদ, মুআমালা এবং ইখলাস সম্পর্কিত জ্ঞানে তিনি ছিলেন অনন্য। ছিলেন সুচরিত্রবান, শিষ্টাচার সমৃদ্ধ এবং জনদরদী।(১)
সুনানু সাইদ ইবনি মানসুর সংকলক আবু উসমান সাইদ ইবনু মানসুরের সান্নিধ্য পেয়েছিলেন তিনি৷ ইরাকে পেয়েছিলেন আবুল আব্বাস ইবনু আতা এবং আবু মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান আল জারিরি প্রমুখের সান্নিধ্য৷ শামে গিয়ে ধন্য হয়েছিলেন তাহির আল-মাকদিসি এবং আবু বকর আদ-দিমাশকির সান্নিধ্যে থেকে৷ আবু বকর আশ-শিবলির কাছে পেয়েছিলেন মাসয়ালার পাঠ। (২)
তাঁর শিষ্যদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন প্রসিদ্ধ আল-মুস্তাদরাক আলাস সহিহাইন সংকলক হাকিম রাহিমাহুল্লাহু। নিশাপুরে তাঁর কাছ থেকে হাদীস শুনেছিলেন হাকিম রাহিমাহুল্লাহু৷ (৩)
৩৪৮ হিজরিতে তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন। (৪)
তথ্যসূত্র:
(১) তাবাকাতুস সুফিয়্যাহ, ৩৪২-৩৪৪।
(২) আল-মুনতাজাম, ১৪/১২০।
(৩) আর-রাওজুল বাসিম ফি তারাজিমি শুয়ুখি হাকিম, ১/ ৫৩১।
(৪) আল-মুনতাজাম, ১৪/১২০।