শয়তানের প্রথম চক্রান্ত হলো, সে মানুষকে কুফর ও শিরকে লিপ্ত করতে চায়। কোরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআলা শয়তানের এই চক্রান্ত সম্পর্কে বলেছেন,
كَمَثَلِ الشَّيْطَانِ إِذْ قَالَ لِلْإِنسَانِ اكْفُرْ فَلَمَّا كَفَرَ قَالَ إِنِّي بَرِيءٌ مِّنكَ إِنِّي أَخَافُ اللَّهَ رَبَّ الْعَالَمِينَ
ইহারা শয়তানের মত। সে মানুষকে বলে, কুফরি কর। অতঃপর যখন সে কুফরি করে তখন সে (শয়তান) বলে, তোমার সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। আমি জগতসমূহের প্রতিপালককে ভয় করি। (হাশর, ১৬)
তবে শয়তান কখনোই মুমিনকে সরাসরি শিরক ও কুফরের দিকে আহবান করে না। সে তার উদ্দেশ্য পূরণে এগিয়ে যায় ধাপে ধাপে। প্রথমে সে মুমিনকে অনর্থক কাজে বেশি ব্যস্ত করে দেয়। এমন অনর্থক কাজ যাতে দ্বীন ও দুনিয়ার কোনো ফায়দা নেই। পরের ধাপে তার সামনে সগিরা গুনাহকে তুচ্ছ করে তোলে। তাকে বোঝায়, আরে এটা তো সগিরা গুনাহ। এমন কত নেককাজ আছে যা করলে আল্লাহ এমনিতেই সগিরা গুনাহ মাফ করে দেন। ফলে মুমিন সগিরা গুনাহতে লিপ্ত হয়ে যায় দ্বিধা দ্বন্দ ছাড়াই।
সগিরা গুনাহগুলো তাকে ঠেলে দেয় কবিরা গুনাহের দিকে। গুনাহ তার অভ্যাসে পরিনত হয়। তখন আর গুনাহ করার আগে সগিরা কবিরা এই শ্রেনীবিন্যাস নিয়ে সে ভাবে না। আর যখন কেউ কবিরা গুনাহতে অভ্যস্ত হয়ে যায়, তখন সে কুফরের কাছাকাছি চলে যায়। সে শয়তানের হাতের পুতুলে পরিনত হয়। শয়তান চাইলেই যেকোনো ভাবে তাকে নিয়ে খেলতে পারে।
নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদিন খুতবা প্রদানকালে বললেন,
‘সাবধান, আমার রব আজ তোমাদেরকে এমন বিষয়ে শিক্ষা দিতে আদেশ করেছেন, যা তিনি আমাকে শিক্ষা দিয়েছেন এবং যা সম্পর্কে তোমরা অজ্ঞ। আর তা হলো, আমি আমার বান্দাদেরকে যে প্রাচুর্য দিয়েছি তা সম্পূর্ণরুপে বৈধ। আমি আমার সকল বান্দাকে একনিষ্ঠ (মুসলিম) হিসেবে সৃষ্টি করেছি। তারপর তাদের কাছে শয়তান এসে তাদেরকে দ্বীন থেকে সরিয়ে দেয়। আমি যে সমস্ত জিনিস হালাল করেছিলাম সে তা হারাম করে দেয়। সে আমার সাথে এমন অংশীদার সাব্যস্ত করার নির্দেশ দেয় যে বিষয়ে আমি কোনো প্রমান পাঠাইনি’। (মুসলিম, ৭০৯৯)
শয়তান একধাপে কাউকে বিভ্রান্ত করে না। সে প্রথমে অপেক্ষাকৃত ছোট কোনো পাপে লিপ্ত করিয়ে দেয়। তারপর তাকে টেনে নেয় পাপাচারের অতল গহবরের দিকে।
আল্লাহ আমাদেরকে শয়তানের চক্রান্ত থেকে হেফাজত করুন।
Facebook Comments