সংকলন
রুকনুদ্দিন বাইবার্স
ইমরান রাইহান জীবনী লেখক

রুকনুদ্দিন বাইবার্স | ইমরান রাইহান

তিনি ছিলেন কঠোর স্বভাবের একজন সুলতান ও সেনাপতি। তিনি আঘাত হানতেন বিদ্যুতগতিতে। শত্রুদের জন্য তার মনে কোনো দয়া বা করুনার স্থান ছিল না। দুইটি মহাদেশ জুড়ে ছুটে বেরিয়েছে তার ঘোড়া। একাই লড়েছেন দুটি পরাশক্তি ক্রুসেডার ও তাতারদের বিরুদ্ধে। তার হাতেই ঘটেছে ক্রুসেডের সমাপ্তি। চূর্ন হয়েছে তাতারদের দম্ভ। সিরিয়ায় এসাসিনদের উপর শেষ মরনকামড় দেয়ার কৃতিত্বও তারই। বাগদাদের পতন পরবর্তী বিপর্যস্ত মুসলিম উম্মাহকে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন সাহসিকতার সাথে। মুসলিম সীমান্তকে করেছেন নিরাপদ। একইসাথে শিক্ষা ও জ্ঞানের প্রসার ঘটিয়েছেন সর্বত্র। তার ক্ষিপ্রতা ও চতুরতার কথা মনে করে পশ্চিমা বিশ্ব তাকে নাম দিয়েছে দ্য প্যন্থার।  তিনি আর কেউ নন, মহান মামলুক সুলতান আল মালিকুয যাহির আবুল ফুতুহ রুকনুদ্দিন বাইবার্স আল বান্দুকদারি।

তার সম্পর্কে হ্যারল্ড ল্যাম্বের মূল্যায়নই তাকে বুঝতে যথার্থ। হ্যারল্ড ল্যাম্ব লিখেছেন, কোনও রকম পাহারা ছাড়াই ঘোড়ায় চেপে উধাও হয়ে যেতেন, তারপর পরদিন উদয় হতেন প্যালেস্টাইনে-চতুর্থদিনে আরবীয় মরুভূমিতে। দ্রুত এবং দূরে হারিয়ে যাওয়ার সমস্ত গুন তার ছিল। তিনি দামেস্কে দরবারি টেনিস খেলতেন, আবার একই সপ্তাহে আটশো মাইল দূরে কায়রোতেও খেলতেন। গ্যারিসন যখন ভাবতো নীল নদের পাড়ে ভোজে মত্ত তিনি, ঠিক সে সময় আলেপ্পোর ধূসর দুর্গের গেটে গিয়ে হাজির হতেন তিনি। সভাসদদের তার পরিকল্পনার কথা জানাতেন না কখনোই, সকল পরিকল্পনা লুকিয়ে রাখতেন নিজের মনের ভেতর।

সুলতান রুকনুদ্দিন বাইবার্স ছিলেন বিশালদেহী একজন যোদ্ধা। চুলের রং লাল, চেহারা তামাটে। একটি চোখ ছিল নীল, অন্যটিতে ক্ষত। তিনি ছিলেন বাঁহাতি, যুদ্ধের ময়দানে এই হাতেই ঝলসে উঠতো তার ধারালো তরবারী।

সুলতান জন্মেছিলেন ভলগা নদী ও উরাল নদীর মাঝামাঝি অবস্থিত দশথ-ই-কিপচাক বা কুমানিয়া অঞ্চলে (বর্তমানে এটি কাজাখস্থানে অবস্থিত) , ১২২৩ খ্রিস্টাব্দের ১৯ জুলাই। তার জন্মের মাত্র কয়েক বছর আগেই খাওয়ারেজম সাম্রাজ্যে চেঙ্গিস খানের আক্রমনের মাধ্যমে মুসলিম ভূখন্ডে তাতারদের আগ্রাসন শুরু হয়। সুলতান বাইবার্সের বাল্যকাল সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য জানা যায়নি। তবে বাল্যকালেই তাঁকে বিরুপ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছিল।

বাইবার্সের ১৪ বছর বয়সে তার জন্মভূমিতে তাতারদের আক্রমনে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় গোটা এলাকা। শিশু বাইবার্স বন্দি হন তাদের হাতে । কিছুদিন পর তাঁকে দেখা গেল দামেশকের দাসবাজারে। ৮০০ দিরহামের বিনিময় তাঁকে বিক্রি করে দেয়া হয়েছিল। সেখান থেকে তাএক নিয়ে যাওয়া হয় হামাহর দাসবাজারে। সেখান থেকে তাঁকে কিনে নেন সুলতান আল মালিকুস সালিহ নাজমুদ্দিন আইয়ুবের একজন সেনাপতি আলাউদ্দিন আইতাকিন বন্দুকদার। আইতাকিন বালক বাইবার্সকে মিশরে নিয়ে আসেন। এখানে মামলুকদের সাথে বেড়ে উঠেন বাইবার্স। সে সময় মামলুকরা বেড়ে উঠতো নিবিড় পরিচর্যার মধ্য দিয়ে। বাইবার্সও এর ব্যতিক্রম নন। পড়াশোনা ও যুদ্ধে তিনি নৈপূন্যের পরিচয় দেন। শীঘ্রই তিনি সুলতান আল মালিকুস সালেহের দৃষ্টি কেড়ে নেন। তাঁকে সেনাবাহিনীতে নিয়োগ দেয়া হয়। ধীরে ধীরে তিনি গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠ হন।

বাইবার্সকে প্রথম শক্তিশালি ভূমিকায় দেখা যায় ১২৩৯ খ্রিস্টাব্দে। সে সময় তিনি নাজমুদ্দিন আইয়ুবের সাথে একটি যুদ্ধে অংশগ্রহন করেন। তবে বাইবার্স বিখ্যাত হয়ে উঠেন ১২৫০ খ্রিস্টাব্দে সংঘঠিত মানসুরার যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়ে। এই যুদ্ধে ক্রুসেডারদের মুখোমুখি হয় মামলুক বাহিনী। ক্রুসেডারদের পক্ষে ছিলেন নবম লুইস, রবার্ট ডি আউতুইস্ট প্রমুখ। মামলুক বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন রুকনুদ্দিন বাইবার্স। তার নেতৃত্বে ছিল দশ হাজার সেনা। অপরদিকে ক্রুসেডারদের বাহিনীতে ছিল ২৫০০০ সেনা। যাদের মধ্যে প্রায় তিনশো নাইট ছিল।

মানসুরার যুদ্ধের কিছুদিন আগে ক্রুসেডাররা দিময়াত শহর আক্রমন করে দখল করে। এটি ছিল ভূমধ্যসাগরের পূর্বদিকে অবস্থিত একটি বৃহত বন্দরনগরি।  শহরের পতনের সংবাদ শুনে সুলতান নাজমুদ্দিন আইয়ুব অত্যন্ত ব্যথিত হন। তিনি বুঝতে পারেন ক্রুসেডাররা এবার নীলনদ অতিক্রম করে কায়রোর দিকে এগিয়ে আসবে। তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন কায়রোর কাছাকাছি আসার আগেই ক্রুসেডারদের আটকাতে হবে। এর জন্য তিনি মানসুরাকে বেছে নিলনে। এটি ছিল নীলনদের পাড়ে অবস্থিত। নাজমুদ্দিন আইয়ুব তখন খুব অসুস্থ ছিলেন। কিন্তু তবু তিনি আদেশ দেন তাকেও সেনাবাহিনির সাথে মানসুরা নিয়ে যাওয়া হোক।

যুদ্ধের মূল দায়িত্ব ছিল বাইবার্সের কাঁধে। তিনি নানা পরিকল্পনা সাজাতে থাকেন। একইসাথে নাজমুদ্দিন আইয়ুবকে মানসুরায় নিয়ে আসা হয়। ১৫ শাবান, ৬৪৭ হিজরিতে এখানেই তিনি ইন্তেকাল করেন। তখন তার স্ত্রী শাজারাতুদ দূর একটি অসামান্য পরিকল্পনা গ্রহন করেন। তিনি রুকনুদ্দিন বাইবার্সকে যুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহনে অটল থাকতে নির্দেশ দেন এবং সুলতানের মৃত্যুসংবাদ গোপন রাখেন। তবে শীঘ্রই সুলতানের মৃত্যুসংবাদ জানাজানি হয়ে যায়। এতে মামলুকদের মনোবল কিছুটা হ্রাস পায়।

এরইমধ্যে ৮ ফেব্রুয়ারী ১২৫০ খ্রিস্টাব্দে ক্রুসেডারদের মুখোমুখি হল মুসলিম বাহিনী। বাইবার্সের তীব্র আক্রমনে ক্রুসেডারদের রক্ষনব্যুহ ছিন্নভিন্ন হয়ে গেল। টানা চারদিন ধরে চলা এই লড়াইয়ে ল্রুসেডার বাহিনীর এক বড় অংশ নিহত হয়। এমনকি নিহত হয় তাদের সেনাপতি রবার্ট। ক্রুসেডাররা সাময়িক পিছু হটে। তবে তাদেরকে সাহায্য করার জন্য নদীপথে ক্রুসেডারদের আরেকটি বাহিনী এগিয়ে আসে।

৬ এপ্রিল ফারিসকু নামক স্থানে আবারও ক্রুসেডারদের মুখমুখি হয় মুসলিম বাহিনী। এখানে হয় রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। প্রায় ৫ হাজার ক্রুসেডার নিহত হয়। বন্দি হয় নবম লুইস। তার হাত পায়ে বেড়ি পরিয়ে তাঁকে নিয়ে আসা হয় মুসলিম শিবিরে। পরাক্রমশলী ক্রুসেডার নবম লুইস হাতকড়া পরা অবস্থায় আটকে রইলেন মামলুক শিবিরে। তার মুক্তির জন্য দেয়া হলো, কঠোর শর্ত।

শর্তগুলো ছিল

১। আট লক্ষ স্বর্নমুদ্রা দিতে হবে। অর্ধেক নগদ, অর্ধেক বাকি।

২। অবশিষ্ট স্বর্নমুদ্রা পরিশোধ করার আগ পর্যন্ত বন্দি ক্রুসেডারদের মুক্তি দেয়া হবে না।

৩। মুসলিম বন্দিদের ছেড়ে দিতে হবে।

৪। দিময়াত শহর মুসলমানদের হাতে সমর্পন করতে হবে।

৫। দুই দলের মাঝে দশ বছরের যুদ্ধবিরতি হবে।

নবম লুইস অনেক কষ্টে ৪ লক্ষ স্বর্নমুদ্রা জমা দেন। তাঁকে মুক্তি দিয়ে দিময়াতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। এই যুদ্ধে মুসলমানদের অভাবনীয় বিজয় হয়। ক্রুসেডারদের দর্প চূর্ন হয়। এর নায়ক ছিলেন সেনাপতি রুকনুদ্দিন বাইবার্স।

১২৫৮  খ্রিস্টাব্দে তাতারদের হাতে বাগদাদের পতন হয়। তারা এগিয়ে আসে সিরিয়ার দিকে। হালাকু খানের পত্র আসে মিসরের শাসক সুলতান সাইফুদ্দিন কুতুযের কাছে। আহবান করা হয় পরামর্শসভা। সবাই ছিলেন আতংকিত। কারণ তাতাররা অপরাজেয়। তাদের কেউ পরাজিত করতে পারেনি। কারো সাহস ছিল না দৃঢ় কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার। সবাই চাচ্ছিলেন তাতারদের কাছে অসহায় আত্মসমর্পন করতে। কিন্তু সাইফুদ্দিন কুতুযের ইচ্ছা ছিল তিনি তাতারদের সাথে লড়বেন। তাকে সমর্থন জানান সভায় উপস্থিত সেনাপতি রুকনুদ্দিন বাইবার্স।

বাইবার্সের পরামর্শে তাতারদের দূতদের মাথা কেটে লটকে রাখা হলো শহরের ফটকে। ক্রোধের আগুন জ্বলে উঠলো তাতার শিবিরে। মামলুক শিবিরেও শুরু হলো যুদ্ধের প্রস্তুতি। ১২৬০ খ্রিস্টাব্দের ৩ সেপ্টেম্বর আইন জালুত প্রান্তরে তাতারদের মুখোমুখি হল মামলুক বাহিনী। মামলুকদের নেতৃত্বে ছিলেন সুলতান সাইফুদ্দিন কুতুয ও সেনাপতি রুকনুদ্দিন বাইবার্স। রুকনুদ্দিন বাইবার্স যুদ্ধের ময়দানে এসেছিলেন তার আবিষ্কৃত হাত কামান নিয়ে যার নাম মিদফা। এটি ছিল তাতারদের অজেয় ধনুকের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য শক্তিশালী অস্ত্র। তাতাররা যুদ্ধে ব্যবহার করতো বিশ ফুট লম্বা ধনুক। তা থেকে নিক্ষেপ করত গান পাউডার মাখানো তীর। এটি ছিল শত্রুদের কাছে প্রচন্ড আতংকের এক অস্ত্র।

আইন জালুতের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে শুরুর দিকে তাতাররা এগিয়ে ছিল। কিন্তু দ্রুত ময়দানে নেমে আসেন সাইফুদ্দিন কুতুয। তার আহবানে সাড়া দিয়ে মুসলিম বাহিনী উজ্জিবীত হয়ে উঠে। মামলুকদের জয় নিশ্চিত হয়। সেনাপতি রুকনুদ্দিন বাইবার্স সাড়ে চারশো কিলোমিটার পথ ধাওয়া করে প্রায় সকল তাতার সেনাকে হত্যা করে ফেলেন। এর ফলে তাতারদের মধ্যে প্রচন্ড আতংক ছড়িয়ে পড়ে। এর আগে কখনো তারা এমন শক্ত সেনাপতির মুখোমুখি হয়নি।

আইন জালুত যুদ্ধের পর সুলতান সাইফুদ্দিন কুতুয ফিরছিলেন মিসরে। পথে রুকনুদ্দিন বাইবার্স তাকে হত্যা করেন। হত্যার পেছনে মূল কারণ ছিল সাইফুদ্দিন কুতুযের সাথে তার পুরনো শত্রুতার জের ও আলেপ্পোর শাসক হতে না পারার ক্ষোভ। ইসলামের ইতিহাসে সর্বকালের সেরা সেনানায়কদের একজন হওয়া সত্ত্বেও বাইবার্সের এই কর্মকান্ড তার চরিতে কালিমা লেপন করেছে। তার এই কর্মের মাধ্যমে মামলুকদের মধ্যে শুরু হয় নতুন এক ধারা। আর তা হলো ক্ষমতা দখলের জন্য হত্যা করা।

২৪ অক্টোবর ১২৬০ খ্রিস্টাব্দে বাইবার্স সালিহিয়া শহরে এসে পৌছেন। এখানে এসে তিনি নিজেকে সুলতান ঘোষনা দেন। উপাধি নেন আল মালিকুয যাহির। এরপর কায়রো পৌঁছে তিনি উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করেন। বাইবার্স ক্ষমতায় থিতু হতে না হতেই আসে যুদ্ধের ডাক। আইন জালুতের পরাজয়ের অপমানের কথা ভুলতে পারছিল না হালাকু খান।

আইন জালুতের চরম প্রতিশোধ নিতে হালাকু খান আবার ধেয়ে আসে মিসর-সিরিয়া পানে। ফোরাত নদী অতিক্রম করে তার বাহিনী আছড়ে পড়ে মামলুক সীমান্তের অভ্যন্তরে। চোখের পলকে হিমস পর্যন্ত শামের বিস্তীর্ণ অঞ্চল হালাকু খান ফের কব্জা করে নেয়। শুনে দ্রুত যুদ্ধের প্রস্তুতি নিলেন রুকনুদ্দিন বাইবার্স।

১২৬২ খ্রিস্টাব্দের জুলাইয়ে হিমসের ময়দানে হালাকু খানের বাহিনীর মুখোমুখি হল রুকনুদ্দিন বাইবার্সের মামলুক বাহিনী। দুদিকে ইতিহাসের সেরা দুই জেনারেল। প্রচন্ড যুদ্ধ হলো হিমসের প্রান্তরে। আচমকা মামলুকরা পালানোর ভান করে। উল্লসিত তাতাররা তাদের ধাওয়া করে। তাদের চমকে দিয়ে মামলুকরা ঘুরে পালটা আঘাত হানে। অপ্রস্তুত তাতাররা কাতারে কাতারে মরতে থাকে। মামলুকরা হ্যান্ড কামান থেকে গোলা নিক্ষেপ করতে থাকে। তারা তাতারদের উপর মরনকামড় বসায়। হালাকু খান নিজে বারবার নেতৃত্ব দিয়েও সুবিধা করতে পারছিল না। এই প্রথম সে উপলব্ধি করলো, আইন জালুত ময়দানে মুসলিমদের জয় কোনো কাকতালিয় ঘটনা ছিল না।

বরং এই প্রথম তারা মুখোমুখি হয়েছে এমন এক শত্রুর যা এতদিনের পরিচিত মুসলিমদের চেয়ে ভিন্ন। মামলুকরা যুদ্ধ কৌশলে অন্য সবার চেয়ে এগিয়ে, সাহসিকতায়ও তারা অনন্য। সবচেয়ে বড় কথা তাদের মনে তাতারদের প্রতি কোনো ভয়ই নেই। এই যুদ্ধে স্বয়ং হালাকু খান পরাজিত হন এবং পিছু হটেন। মুসলিমদের মন থেকেও তাতার আতংক মুছে যায়।

১২৬২ খ্রিস্টাব্দে সুলতান বাইবার্স পুনরায় আব্বাসি খিলাফাহ প্রতিষ্ঠা করেন। আবুল আব্বাস আহমদ নামে আব্বাসিদের একজন বংশধরকে তিনি মিসরে নিয়ে আসেন। ২২ নভেম্বর ১২৬২ খ্রিস্টাব্দে তাকে খলিফা নিয়োগ দেয়া হয়। এভাবে মিসরে আব্বাসি খিলাফাহ প্রতিষ্ঠা হয়। উসমানি সুলতান সেলিমের হাতে পতনের আগ পর্যন্ত এই খিলাফাহ টিকে ছিল। তবে বলে রাখা ভাল, এটি সত্যিকারের কোনো খিলাফাহ ছিল না। এটি ছিল প্রতিকি খিলাফাহ। মূল ক্ষমতা থাকতো মামলুক সুলতানদের হাতেই। এমনকি তারাই খলিফাকে নিয়োগ দিতেন এবং ইচ্ছে হলে অপসারণ করতেন।একজন যোদ্ধা ও সেনাপতি হিসেবে বাইবার্স ছিলেন অনন্য।

এর পাশাপাশি তিনি সামাজিক সংস্কারের নানা কাজও করেছেন। ১২৬২ খ্রিস্টাব্দে কায়রোতে তিনি জাহিরিয়া মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেন। এই মাদরাসার ছিল সুবিশাল কুতুবখানা। এখানে এতিমদের পড়াশোনা করার ব্যবস্থা ছিল। ১২৭৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি দামেশকেও জাহিরিয়া মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেন। এই মাদরাসা এখনো টিকে আছে। ১২৬৭ খ্রিস্টাব্দে কায়রোতে জামি জাহির বাইবার্স নামে এক সুবিশাল মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন।

তাতাররা পরাজয়ের গ্লানি ভুলতে পারছিল না।  ১২৭৩ খৃস্টাব্দে বীরা নামক স্থানে বাইবার্স আবার তাদেরকে শোচনীয়ভাবে পরাজিত করেন। একপর্যায়ে তারা এশিয়া মাইনরের রোম্যান সালজুক সালতানাতের সাথে জোটবদ্ধ হয়ে ১২৭৭ সালে মামলুকদের বিরুদ্ধে এক চূড়ান্ত যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। এলবিস্তান নামক স্থানে সংগঠিত এই যুদ্ধে সুলতান বাইবার্স শোচনীয়ভাবে পরাজিত করেন মঙ্গোল বাহিনী ও মিত্র সালজুক বাহিনীকে।

বাইবার্সের শত্রু শুধু তাতাররাই নয়। বরং ক্রুসেডাররাও। ইতিপূর্বে মানসুরার যুদ্ধে তিনি একবার ক্রুসেডারদের শায়েস্তা করেছিলেন। ক্রুসেডাররা সেই অপমান ভুলতে পারেনি। তারা সুযোগের অপেক্ষায় ছিল, এজন্য আইন জালুতের যুদ্ধেও তারা তাতারদের সাহায্য করেছিল। এন্টিয়কের রাজা ষষ্ঠ বহিমন্ডের সাথে তাতারাদের সুসম্পর্ক ছিল। বাইবার্স সিদ্ধান্ত নিলেন শত্রুর শিকড়সুদ্ধ উপড়ে ফেলতে হবে। তিনি নজর দিলেন এন্টিয়কের দিকে।

এন্টিয়ক ছিল এশিয়ায় খৃস্টানদের সর্বশ্রেষ্ঠ ঘাঁটি । সুলতান বাইবার্স এন্টিয়ক অবরোধের জন্য একটি বাহিনী প্রেরন করেন এবং দীর্ঘদিন তা অবরোধ করে রাখেন। অবশেষে আর্মেনীয় রাজা হিথম তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসলে সুলতান বাইবার্স অবরোধ তুলে নেন। এরপর ১২৬৩ সালে তিনি ক্রুসেডারদের অন্যতম শক্ত দুর্গ আক্কা অবরোধ করেন। এরপর তিনি একে একে ক্রুসেডারদের সকল দুর্গগুলো গুঁড়িয়ে দিতে থাকেন। তার হাতে পতন হয় নাজারেথ ও আরসুফ দুর্গ। এরপর তিনি দখল করেন ছেতিউ পেলিরিন। ক্রুসেডারদের কাছে এই দুর্গের প্ররিচিতি ছিল দুর্ভেদ্য দুর্গ নামে।

১২৬৪ খ্রিস্টাব্দে বাইবার্স আতলিত অবরোধ করেন। কাঠের নির্মিত কামান থেকে দুর্গের উপর গোলা নিক্ষেপ করা হতে থাকে। আগুন ধরে যায় দুর্গের প্রাচীরে। এক সময় শহরের পতন ঘটে। বাইবার্সের আদেশে হত্যা করা হয় শহরের চার হাজার অধিবাসীকে।  ১২৬৫ সালে ক্রুসেডারদের দখলে থাকা জেরুজালেমের নিকটবর্তী কাইসারিয়া ও হাইফা শহরদুটি জয় করেন। বিনা যুদ্ধে জাফাও দখলে নেন। এরপর ৪০ দিনের অবরোধ শেষে আরসুফও দখল করে নেন।

১২৬৬ সালে সাফেদ ও রামলা শহর দুটিও ক্রুসেডারদের দখলমুক্ত করে ফেলেন। এভাবে একের পর রাজ্য হারিয়ে ক্রুসেডাররা অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে কোন কোন ক্রুসেড রাজ্য তাদের দখলে থাকা কিছু ভখন্ড স্বেচ্ছায় সুলতান বাইবার্সকে উপহার দিয়ে তাকে সন্তুষ্ট রাখার চেষ্টা করে।

এবার সুলতান তার দৃষ্টি নিবদ্ধ করলেন ঔদ্ধত্য প্রদর্শনকারী ক্ষুদ্র আর্মেনীয় সম্রাজ্যের প্রতি। তিনি প্রথমে আর্মেনীয় রাজা হিথমকে আনুগত্য প্রদর্শন ও কর প্রদান করতে বলেন। কিন্তু মঙ্গোলদের চাপে সে এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। ফলে সুলতান বাইবার্স আমির সাইফুদ্দিন কালাউনের নেতৃত্বে একটি বাহিনী প্রেরন করেন তাকে শায়েস্তা করতে।

১২৬৬ সালে সংগঠিত রক্তক্ষয়ী এক যুদ্ধে মামলুকদের হাতে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয় আর্মেনীয় বাহিনী। সিস ও আয়াস নামক দু’টি দূর্গ দখল করে মামলুক সৈন্যরা পাইকারি হারে তাদের হত্যা ও বন্দি করে এবং আর্মেনীয় সম্রাজ্যে ব্যাপক ধ্বংসাযজ্ঞ চালায়। এরপর ধীরে ধীরে এ সম্রাজ্যের বিলুপ্তি ঘটে।

১২৬৮ সালে সুলতান বাইবার্স এশিয়ায় খ্রিস্টানদের দোলনা ও দুর্ভেদ্য ঘাটি খ্যাত এন্টিয়ক জয় করেন। এ সময় ১৬ হাজার ক্রুসেডারকে হত্যা এবং বন্দি করা হয় আরও ১ লাখ ক্রুসেডারকে । এন্টিয়োকের পতনের সঙ্গে সঙ্গে আশেপাশের ছোটখাটো ক্রুসেড রাজ্যগুলিও ভেঙ্গে পড়ে। নিজেদের শহর হাতছাড়া হতে দেখে মরিয়া হয়ে উঠে ক্রুসেডাররা। তারা নতুন করে ক্রুসেড ঘোষণা করে। এই ক্রুসেডের আহবান এসেছিল এন্টিয়কের রাজা চতুর্থ বোহেম্নডের কাছ থেকে। সিদ্ধান্ত হয় এই ক্রুসেডে তাতারদেরও সাহায্য নেয়া হবে। সম্মিলিত বাহিনী একসাথে তিনদিক থেকে মামলুক সাম্রাজ্যে আক্রমণ করবে।

ফ্রেঞ্চ সম্রাট নবম লুই তার বাহিনীণ নিয়ে তিউনিস দিয়ে প্রবেশ করবে এবং হামলা চালাবে। ইংল্যন্ড ও সাইপ্রাসের ক্রুসেডাররা হামলা চালাবে মামলুক সাম্রাজ্যের এশিয় অংশে, লেভান্টে। তাতার নেতা আবাগা খান তার বাহিনী নিয়ে হামলা করবে হালাব ও দামেশকে। তিনদিকে একসাথে আক্রমনের ফলে বাইবার্স দিশেহারা হয়ে উঠবেন। এটি ছিল ক্রুসেডারদের পক্ষ থেকে মরনকামড়।

১২৭০ খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাসে ক্রুসেডারদের নৌবহর এসে উপস্থিত হল প্রাচীন নগরী কার্থেজ এর উপকুলে। এই এলাকা তখন ছিল বনু হাফসের শাসকদের দখলে। কিন্তু মুসলমান হলেও তারা ছিল ক্রুসেডারদের মিত্র। ক্রুসেডাররা সামনে এগিয়ে যেত কিন্তু সাগর পাড়ি দিয়ে এসে তাদের বেশিরভাগ সেনা অসুস্থ হয়ে পড়ে। সম্রাট নবম লুই এর ছেলে জন ত্রিস্তান মারা যায়। কিছুদিন পর সম্রাট নিজেও পেটের ব্যাথায় ভুগে মারা যায়। পুরো বাহিনীতে হতাশা দেখা যায়। ক্রুসেডাররা ফেরত যায়। তাদের অবস্থা দেখে অন্য দুই বাহিনী আর মাঠেই নামেনি। এভাবে কোনো লড়াই ছাড়াই থেমে যায় অষ্টম ক্রুসেড।

কিন্তু পরের বছর আবার বেজে উঠে ক্রুসেডের ডংকা। সুলতান বাইবার্স তখন ত্রিপোলি অবরোধ করে আছেন। এ সময় ক্রুসেডারদের রনতরী এগিয়ে আসে লড়াই করতে। মামলুকরাও অগ্রসর হয় তাদের নৌবাহিনী নিয়ে। কিন্তু যুদ্ধের শুরুতেই মামলুকরা পরাজিত হয়। সংবাদ পেয়ে ঝড়ের বেগে ধেয়ে আসলেন সুলতান বাইবার্স। হামলে পড়লেন ক্রুসেডারদের উপর। একের পর এক আক্রমনে পরাজিত করেন তাদের। ১২৭২ সালের মে মাসে ক্রুসেডাররা আত্মসমর্পন করে। কাইসারিয়াতে দুইদলের প্রতিনিধিরা বসে দশ বছরের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেন।

আর এভাবেই সুলতান বাইবারসের মাধ্যমে মুসলিম ভূখণ্ডগুলো থেকে স্থায়িভাবে ক্রুসেডাররা বিতাড়িত হয়, মুসলিম উম্মাহ ফিরে পায় তার হারানো গৌরব। ক্রুসেডের ইতিহাসে সুলতান বাইবার্সই সব থেকে বেশি ক্রুসেডার হত্যাকারী ও তাদের শহর ও দুর্গ ধ্বংসকারী ব্যক্তি। ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে অসংখ্য যুদ্ধই মূলত তাঁকে খ্যাতির শীর্ষে নিয়ে গেছে। ইসলামকে রক্ষার জন্য মোঙ্গল ও ধর্মযুদ্ধকারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তিনি ইসলামের দ্বিতীয় সালাহ উদ্দিন উপাধি লাভ করেন।

বাইবার্সের তৃতীয় শত্রু ছিল এসাসিনরা। এসাসিনদের উত্থান সেলজুকি শাসনামলে, যখন সুলতান মালিক শাহ সেলজুকি ক্ষমতায় ছিলেন। পারস্যে হাসান বিন সাব্বাহ নামে এক শিয়া এই দল প্রতিষ্ঠা করেছিল। যদিও তারা ধর্মীয় মতবাদ প্রচারের কথা বলতো, কিন্তু তারা পরিচিত ছিল গুপ্তঘাতক হিসেবেই। এটিই ছিল তাদের পেশা। তাদের হাতে মুসলিম বিশ্বের অনেক খ্যাতনামা ব্যক্তি নিহত হন। ক্রুসেড শুরু হলে ক্রুসেডাররা তাদেরকে অর্থের বিনিময়ে ভাড়া করে। এ সময় এসাসিনরা সুলতান সালাহুদ্দিন আইয়ুবির উপরও দুবার আক্রমণ করেন।

এসাসিনদের দুটি শক্তিশালী ঘাটি ছিল ইরানে ও সিরিয়ার। ইরানের আলামুত দুর্গ ছিল তাদের হেডকোয়ার্টার। বাগদাদ আক্রমনের পূর্বে হালাকু খান এই দুর্গে আক্রমণ করে। এসাসিনদের পরাজিত করে তাদের শাইখুল জাবাল রুকনুদ্দিন খোরশাহকে বন্দি করে কারাকোরাম নিয়ে যায়। এর ফলে ইরানে এসাসিনদের উতপাত চিরদিনের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু সিরিয়ায় তাদের ছিল নিরাপদ দুর্গ। সেখান থেকে তারা নিরাপদে নিজেদের কাজ চালিয়ে যেত।

১২৭০ খ্রিস্টাব্দে বাইবার্স নজর দিলেন সিরিয়ার এসাসিন দুর্গের দিকে। পরের তিন বছর একের পর এক আক্রমনে কাপিয়ে তুললেন এসাসিনদের সাম্রাজ্য।  ১২৭৩ সালের মধ্যে বাইবার্স তাদের ৯টি দূর্গই দখল করে উক্ত অঞ্চলসমূহকে তার সম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করে নেন। এই আক্রমণে গুপ্তঘাতকদের ক্ষমতা চিরতরে খর্ব করেন তিনি। এইভাবে যবনিকাপাত হয় ত্রাস ও ষরযন্ত্রে ভরা দীর্ঘ এক শাসনকালের। ১২৭৬ খৃস্টাব্দে বাইবার্স নুবিয়া অধিকার করেন এবং উত্তর-পশ্চিম আফ্রিকাও তাঁর করদরাজ্যে পরিণত হয়।

১২৭৭ সালে বাইবার্স এগিয়ে গেলেন আনাতোলিয়ার দিকে। উদ্দেশ্য তাতারদের থেকে সালজুক রোম কেড়ে নিবেন। আলবিস্তানের উত্তরে অবস্থিত কাইসারিয়া শহরে আরো একবার মুখোমুখি হল তাতার-মামলুক বাহিনী। এখানে সংঘঠিত ভয়াবহ যুদ্ধে তাতারদের বেশিরভাগ নেতা নিহত হয়। ক্রুদ্ধ মামলুকরা তাতারদের কেটে টুকরো টুকরো করতে থাকে। ২৩ এপ্রিল ১২৭৭ খ্রিস্টাব্দে সুলতান বাইবার্স বিজয়ীর বেশে কাইসারিয়া শহরে প্রবেশ করেন। এই শহরে দীর্ঘদিন মুসলমানদের জন্য প্রকাশ্যে ধর্মপালন নিষিদ্ধ ছিল। সুলতান বাইবার্স এসব আদেশ রহিত করেন।

১২৭৭ সাল

সুলতান রুকনুদ্দিন বাইবার্স অবস্থান করছিলেন দামেশকে। দামেশক হলো সেই শহর, যেখানে শাসন করেছেন সুলতান নুরুদ্দিন জেংগির মত মহান শাসক। এখানেই তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন দারুল হাদিস নুরিয়া। বাইবার্সও দামেশককে সাজিয়েছিলেন নিজের মনমত করে। এখানে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন নানা প্রতিষ্ঠান।

এই শহরে অবস্থান করছিলেন বাইবার্স। একের পর এক যুদ্ধে তিনি ছিলেন কিছুটা ক্লান্ত। তার বিশ্রাম দরকার ছিল। কিন্তু কেহানে অবস্থানকালে ১২৭৭ সালের ১ জুলাই তিনি ইন্তেকাল করেন। ধারণা করা হয় তার পানিয়তে বিষ মিশিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছিল। মৃত্যুর সময় তার বয়স ছিল ৫৪ বছর। তিনি ১৭ বছর ধরে মামলুক সাম্রাজ্য শাসন করেছিলেন। মুসলিম ভূমিকে রক্ষা করেছিলেন ক্রুসেডার, তাতার ও এসাসিনদের করাল থাবা থেকে।

তিনি ছিলেন অসামান্য সাহসিকতার অধিকারি। ইবনে তাগরি বারদি ও মাকরেজি রহিমাহুল্লাহ দুজনেই তার প্রশংসা করেছেন। তিনি ছিলেন অল্পকজন সাহসী মানুষের অন্যতম যাকে শত্রু কখনো আতংকিত করতে পারেনি। ক্রুসেডারদের সেরা বাহিনীর বিরুদ্ধে তিনি লড়ে গেছেন কিন্তু বিন্দুমাত্র পরোয়া করেননি।

তিনি ছিলেন দয়ালু ও মানবিক এক শাসক। মাকরেজি লিখেছেন, রমজানের প্রতিরাতে তিনি ৫ হাজার মানুষকে খাবার খাওয়াতেন। প্রতিবছর দরিদ্র ও দুস্থদেরকে দশ হাজার ইরদাব দান করতেন।

বাইবার্সকে তুলনা করা চলে সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ুবির সাথে। তবে যুদ্ধক্ষেত্রে উনেক সময় তিনি ছিলেন আইয়ুবির চেয়েও সফল। এর কারণ হলো তিনি নেতৃত্ব দিতেন মামলুকদের মত প্রশিক্ষিত দুর্ধর্ষ একটি বাহিনীর। অপরদিকে সুলতান আইয়ুবী মাঝারি মানের একটি বাহিনী নিয়ে দিনের পর দিন লড়ে গেছেন ক্রুসেডারদের সেরা বাহিনীর বিরুদ্ধে।

সুলতান আইয়ুবী যুদ্ধের ময়দানেও শরয়ী বিষয় মাথায় রেখে লড়তেন। ফলে শত্রু সন্ধি করতে চাইলে তাতেই তিনি সায় দিতেন। ইসলামের যুদ্ধনীতি শতভাগ মেনে চলতেন। অপরদিকে বাইবার্স চাইতেন শত্রুদের মাঝে আতংক ছড়িয়ে দিতে। তিনি যখন আঘাত করতেন তখন ভয়াবহ আক্রমণ করতেন। শত্রুকে নিকেশ না করে থামতেন না। অনেক সময় তিনি সন্ধির প্রস্তাবও ফিরিয়ে দিতেন। ফলে শত্রুরাও তাকে প্রচন্ড ভয় পেত।

Facebook Comments

Related posts

মজলুম বন্দীর জন্য সুপারিশ | ইমরান রাইহান

সংকলন টিম

থানভীর পরশে -১ম পর্ব | ইমরান রাইহান

সংকলন টিম

ফাতিমা আল-ফিহরি | পৃথিবীর সর্বপ্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা

সংকলন টিম

1 comment

শুয়াইব হাসান November 13, 2020 at 10:49 pm

আলহামদুলিল্লাহ। ভালো একটি ওয়েবসাইট পেলাম। ইতিহাসের অনন্যসাধারণ বীর মুসলিমদের ব্যাপারে জানার জন্য সাইটটি কার্যকর মনে হচ্ছে। আল্লাহ আপনাদের মেহনত কবুল করুন এবং ইতিহাসের পাঠ আমাদেরকে আরও বেশি বেশি দেওয়ার তাওফিক দান করুন। আমীন।

Reply

Leave a Comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

error: Content is protected !!